Sunday, April 25, 2010

কিছু কথা বা পাগলের প্রলাপ

আমি আগে রোজনামচা লিখতুম। সে অনেক আগে। প্রথম লেখা শুরু করি যখন আমি পড়তুম ষষ্ঠ শ্রেণীতে। যাকে বলে ক্লাস সিক্স। সেভেন বা এইটে কেটে গেলো সেই প্রেমের সুতো। তার পরে লেখা শুরু করি আবার কলেজে উঠে। টানা তিন বছর লিখেছিলুম। প্রেমের প্রতি ছিলো ভয়ানক অভক্তি। শেষ করি জীবনে প্রথম বার প্রেমে পড়ার পরে। তারও কারণ ছিলো। নিজের ডায়রির পাতা উল্টোলে নিজেকে চিনতে অসুবিধা হতো ভারি। এতো পরস্পর বিরোধী কথা লিখতাম কয়েকদিন বাদে বাদেই, যে ডায়রি না ক্যালাডাইস্কোপ বোঝা দুস্কর হয়ে পড়ত।

এখন বুঝি, সেটাই ঠিক ছিলো। সেই সময়টাই ছিলো অন্য রকম। এখন সেদিকে তাকালে, সাদা-কালো ছবি ভরা অ্যালবামের গন্ধ পাই। আমার বাবা আর মার বিয়ের ছবির একটা অ্যালবাম আছে। সাদা-কালো ছবিতে ভরা। সেই রকম। তাতে চার কোনাতে চারটে তিন কোনা খাপ মতন থাকতো। তাতে ছবিটা আটকে দিতে হতো।আর নীচে ছিলো ভেলভেট কাগজের পাতা। দুটো পাতার মাঝে থাকত ট্রেসিং পেপারের ব্যবধান। ছবিটা খারাপ হওয়া শুরু হতো ওই চারটে কোণা থেকে। মাঝখানটা থাকতো পরিপাটি। অতীতটাও অনেকটা ঐ রকম। চার পাশের ডিটেইলস ক্রমে ধুসর হতে থাকে, কেবল মাঝখানের গল্পটা পরিষ্কার।

প্রথম প্রেমে পড়া আর শেষ প্রেমে পড়া, ওই একবারই। দুবার বেলতলা যায় পাগলে। আর আমার এক বারেই তীর্থদর্শণ হয়ে গেছে। তার পুণ্যশ্লোকের রেশ এখনো আমি বয়ে চলেছি, ঠিক যেভাবে ভরত বয়ে বেড়াতেন রামের চপ্পল।

মাঝে মাঝে ভাবি, যদি লিখতে পারতাম একটা ল্য'ক্যুজ। জোলার মতন। লেখাটা খুব দরকার। অন্তত পশ্চিমবঙ্গের জন্য। আর লেখা দরকার শ্যাম বা কুল কাউকেই না রেখে। ওখানে এখন বুদ্ধিজীবি সম্প্রদায়ও হয় শ্যামের দলে, নইলে কুল রাখতে ব্যস্ত।

শিবরাম চকরবরতির একখান বই আছে, নাম "ঈশবর (আমার বাংলা লেখার নরমকলে আবার ব-ফলা ঠিক-ঠাক আসে না) পৃথিবী ভালোবাসা"-তাতে আছে। শিব্রামের বাবা একদিন গাছতলাতে মলত্যাগ করতে বসেছেন, কুল গাছতলাতে। আর সমীপে, গ্রামে আসা যাত্রাদলের এক সখীর ভূমিকায় নামা গোঁফ কামানো ছোকরা। এদিকে গাছ থেকে পড়েছে একটা কুল। উনি লোভ সামলাতে না পেরে টপ করে দিয়েছেন সেটাকে মুখে পুরে। তারপরে রাতে তো বসেছে যাত্রা। শ্যামলালের উপরই কিছু (সুকুমার রায়ের নয়, সেই যে "উঠানে বাখানি করি নেচেছিলো কাল, তারপরে কি হইল জানে শ্যামলাল" সেটা নয়)। তাতে ছোকরাটা যথারীতি সখি সেজে নাচ-গান করছে। করতে করতে হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে গেয়েছে, তোমার কুলের কথা কয়ে দেব। ব্যস, বাবা মশায়ের চোখ কপালে। সমানে প্যালা দেওয়া শুরু। ব্যাটাকে চুপ করানো ভারী প্রয়োজন। টাকা-কড়ি, সোনার ঘড়ি, চেন সব গেল। ছোকরা তো আনন্দে আত্মহারা। খালি আসে, নাচে আর বাবামশায়ের সামনে হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে গায়, "তোমার কুলের কথা কয়ে দেব।"শেষ-মেষ সবই যখন গেল, তখন ভদ্রলোক রেগে মেগে পরনের কাপড়টা খুলে ছোকরার হাতে দিয়ে বললেন, "ক, কি কবি ক। হাগতে বসে একটা কুল খেয়েছি, এই তো -" বলে দিগম্বর হয়ে সভা থেকে বেড়িয়ে গেলেন।

আমার তো মনে হয়, হাল এই রকমি। সাহেবরা শ্যামলীলাও দেখেন আর কুলের কথাও ঢাকেন। আমার মনে হয়, অন্তত কবীর সুমন আমাকে কিছুটা সাপোর্ট করবেন। সুনীল গাঙ্গুলী বা সৌমিত্র চ্যাটার্জী করলেও ভালোই।এই সব কি যাদের হাতে তলোয়ারের থেকেও ভারী যন্তর, যারা রামমোহন, বিদ্যাসাগর, রবি ঠাকুরের বংশধর তাদের মানায়? তবে "কেউ রাজী না হলেও কিছু যায় আসে না।"

রাত হয়ে গেছে। শুয়ে পড়ি। এই সব পেট খারাপের পূর্ব লক্ষণও হতে পারে।

1 comment:

Somnath Dasgupta said...

bhalo hoyechhe .. guchchho hoyechhe ... continue koris.....